ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আহ্বান জানালেও খুব বেশি সাড়া পায়নি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। ২০ এপ্রিল আবেদনের শেষ দিন হলেও আলোচনায় থাকা অনেক দলই এখনও আবেদন জমা দেয়নি। আবার কেউ কেউ সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছে ইসিকে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যেসব দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, তারা হলো- আওয়ামী লিগ, আমজনতার দল, নতুন বাংলা, সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোট এবং গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি। তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনও আবেদন করেনি। দলটি জানিয়েছে, তারা নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়াতে ইসিকে অনুরোধ জানাবে।
এনসিপি ২৮ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’-এর অঙ্গীকার নিয়ে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সমন্বয়ে গঠিত এই দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী হলেও নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে আবেদন করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
এর মধ্যেই ১৮ মার্চ আদালতের একটি আদেশ নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় ছায়া ফেলেছে। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের দায়ের করা রিটের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের জন্য ইসির জারি করা গণবিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়। এরপর থেকেই মূলত নিবন্ধনে আগ্রহ হারায় বেশিরভাগ সম্ভাব্য আবেদনকারী দল।
ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজ জানান, ২৫ মার্চ ‘আওয়ামী লিগ’ নামেই একটি দল প্রথম নিবন্ধনের আবেদন করে। এরপর ধীরে ধীরে আরও কয়েকটি দল আবেদন জমা দেয়।
তবে কয়েকটি দল আবেদন জমা দিলেও তা এখনও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে পৌঁছায়নি বলেও জানা গেছে।
দলের নিবন্ধন আবেদনের সময় বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না করলে করা যাবে না এমন কোনো বিষয় নাই। আমাদের বিজ্ঞপ্তিটা দেওয়ার কারণ হলো যাতে সবাই জানে যে নতুন দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু। সময় শেষ হলেও আবেদন করা যাবে।
নির্বাচনি সহায়তা ও সমন্বয় শাখার কর্মকর্তারা জানান, হাতে গোনা কয়েকটি আবেদন ছাড়া এখনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য তাদের কাছে আসেনি।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ৯৮টি নিবন্ধন আবেদন জমা পড়েছিল। ২০০৮ সালে দল নিবন্ধন প্রথা চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলেও বর্তমানে বৈধ দল রয়েছে ৫০টি। পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে বিভিন্ন কারণে।