যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েল ১১ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসলেও হামাস বলেছিল তারা ৫ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি। এনিয়ে চলমান হামলার মাঝে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরপর ইসরায়েরল তাদের পূর্বের দাবিতে কিছুটা ‘নমনীয়’ হন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুই কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গত মাসে ইসরায়েল ১১ জন জীবিত জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি পুনরায় চালুর দাবি জানায়। অন্যদিকে, হামাস বলেছিল তারা ৫ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি। উভয়পক্ষ এরপর আরও ছাড় না দেওয়ায় আলোচনা দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় ছিল এবং ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকাজুড়ে সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করে।
এই অচলাবস্থা কাটাতে, মিসর গত কয়েক দিনে একটি নতুন প্রস্তাব তুলে ধরে, যাতে ৮ জন জীবিত জিম্মি মুক্তির বিষয়টি উল্লেখ ছিল।
এই সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার পূর্বের দাবিতে কিছুটা নমনীয় হন বলে কর্মকর্তারা জানান।
বৃহস্পতিবার, ইসরায়েল কায়রোর সর্বশেষ প্রস্তাবের জবাব মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের কাছে জমা দেয়। এতে ইসরায়েল পূর্বে দাবিকৃত ১১ জনের চেয়ে কিছুটা কম সংখ্যক জিম্মি মুক্তির কথা বলেছে — যদিও নির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি।তবে, ইসরায়েল জোর দিয়ে বলেছে, ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যেই সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। হামাস চেয়েছিল যুদ্ধবিরতির পুরো সময়জুড়ে ধাপে ধাপে জিম্মি মুক্তি দিতে।
আরও একটি বিষয়ে, ইসরায়েলের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রতি জিম্মির বিপরীতে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা কমাতে হবে, এমনকি যারা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তাদের ক্ষেত্রেও।
এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল একজন জিম্মির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন ফিলিস্তিনিকেই মুক্তি দিতে চায়।
ইসরায়েল তাদের প্রস্তাবে আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হলে গাজা থেকে তারা অবরোধ তুলে নেবে এবং সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেবে। এছাড়া গত ১৮ মার্চের আগে তাদের সেনারা গাজার যে স্থানে ছিল তাদের সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে। অর্থাৎ গাজার মধ্যবর্তীস্থানগুলো থেকে দখলদার সেনারা সরে যাবে।
অস্থায়ী এ যুদ্ধবিরতি শুরু হলে হামাসের সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করা হবে বলেও প্রস্তাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েল।
এদিকে, শনিবার (১২ এপ্রিল) রাতে মিসরের রাজধানী কায়রোতে যাবেন হামাসের কর্মকর্তা খলিল আল-হায়া। তার সঙ্গে থাকবেন তার অন্য প্রতিনিধিরা। মিসর খলিল আল-হায়ার কাছে ইসরায়েলি প্রস্তাবটি পৌঁছে দেবে।
সংশ্লিষ্ট ওই দুইজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামাস দখলদার ইসরায়েলের বেশিরভাগ দাবি মানবে না হয়ত। এ কারণে খুব শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।